ইসলাম ও কুসংস্কার পর্ব-২

মূর্তি উপাসনার মাধ্যমে বৃষ্টি আসার কুসংস্কার

by sondeshbd.com
160 views

মানবজাতির আদি ইতিহাস থেকে দেখা যায়—যখনই মানুষ আল্লাহর নির্দেশনা থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তখনই সমাজে কুসংস্কার, অজ্ঞতা, মূর্তিপূজা, জ্যোতিষ, অশুভ ধারণা, দেবতার সন্তুষ্টির নামে অমানবিক রীতি এবং বিভিন্ন ভিত্তিহীন বিশ্বাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

কুসংস্কার হলো এমন বিশ্বাস, ধারণা বা আচরণ—যার কোনো যুক্তি, প্রমাণ বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই; তবুও সমাজে তা প্রচলিত। এক কথায়, কুসংস্কার হলো ভিত্তিহীন বিশ্বাস, যার পেছনে না থাকে যুক্তি, না থাকে কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। মানুষের মনগড়া ধারণা, কাল্পনিক চিন্তাভাবনা কিংবা লোকমুখে প্রচলিত গল্প—এসব থেকেই সাধারণত এমন বিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এসব রীতি-নীতি বংশপরম্পরায় চলে আসে, আর সমাজের মানুষ প্রশ্ন না করেই তা অনুসরণ করতে থাকে।
পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন নবীর যুগে সংঘটিত এসব কুসংস্কারকে তুলে ধরে মানুষকে সত্য ও যুক্তির পথে আহ্বান জানিয়েছে। পূর্ববর্তী নবীগণ সালাম তাদের সমাজে এ অন্ধবিশ্বাস ভাঙতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। নীচে নবীভেদে সেসব কুসংস্কারের বিবরণ দেওয়া হলো।

২. হযরত হুদ (আ.) আদ জাতির কুসংস্কার:
আদ জাতি ছিল শক্তিশালী, উচ্চাভিলাষী এবং অহংকারী এক জাতি। তারা মনে করত—তাদের শক্তি ও বংশগত মর্যাদার কারণে কোনো বিপদ তাদের ছুঁতে পারবে না। আবার তারা বিশ্বাস করত: নবী হুদ (আ.) আল্লাহর একত্ববাদ প্রচার করায় অমঙ্গল বয়ে আনছেন।
ঝড়-দুর্যোগ আসলে নবীর ওপর দায় চাপানো। মূর্তির উপাসনার মাধ্যমে বৃষ্টি আসবে—এমন বিশ্বাস তারা লালন করতো।
কোরআন শরীফে আল্লাহ তাআলার এরশাদ করেন:
তারা বলল, “ আমরা তোমাকে নির্বোধ মনে করি।” (সূরা আরাফ: আয়াত: ৬৬)
“তোমার আগমনে আমরা অশুভ দেখি।” (সূরা নামল: আয়াত: ৪৭)
অর্থাৎ “হুদ (আ.) তাঁর বার্তা নিয়ে আসায় দুর্যোগ নেমে এসেছে”—এমন কুসংস্কার ছড়ায়। তারা বরকত পেতে মূর্তিপূজা করত এবং বৃষ্টির জন্য দেব-দেবীর কাছে মানত মানত করত।
আদ জাতি এই অশুভ ধারণাকে ধর্মীয় বিশ্বাসে পরিণত করেছিল। এই অন্ধবিশ্বাসের কারণেই আল্লাহ তাদের ওপর ধ্বংসাত্মক ঝড় পাঠান। (চলবে)
লেখক: আহমাদ হিজবুল্লাহ মাদানী
সিনিয়র আরবি শিক্ষক, এভাররোজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, পল্লবী,ঢাকা।
অনার্স (কুল্লিয়াতুশ শরীয়াহ), ডিপ্লোমা ইন অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ: ইসলামিক ইউনিভার্সিটি,মদিনা।

আরো পড়ুন