একগুচ্ছ কবিতা
আক্ষেপ
সন্ধ্যাতারা
সমস্ত সভ্যতাকে একসাথে দেখছি তোমার ভেতর,তোমার মাঝে।
সন্ধ্যা,আমার এই অখাদ ভালোবাসা,কেবলমাত্র তোমারই অজানা।
আর যারা চেয়েছিল তোমায়,তারাও জেনেছে এ খবর গত সাঁঝে।
তোমার সাথে প্রথম সাক্ষাত সীমান্ত সম্ভারে।
তারপর ষোলোই ডিসেম্বর সারা দিন। মন আটকে আছে তোমাতে।
খুব করে চাই,আমাদের দেখা হোক আবার। বারবার।
এখন তোমার কর্মব্যস্ততা।পরিস্থিতি তোমাদের প্রতিকূলে।তোমাকে কোনো অনুকূল কর্ম পরিবেশ দিতে পারিনি আমি কিংবা আমরা।পারেনি কো এই সিস্টেম। সিস্টেমের নজরবন্দি এই সরকার।
তুমি বলতে সব ঠিক হয়ে যাবে।
এই সিস্টেমের বিরুদ্ধে অনেক কিছুই জানে সবাই।আবার অনেকে না জানার ভান করে।মাঝে মধ্যে রাগ ওঠে,ছুঁড়ে দিতে চাই এসিড।পুড়ে যাক রাজনীতি।ঝলসে যাক সরকার । বন্ধ হোক এলিটদের ষড়যন্ত্র।
কিন্তু, আমার হাতে এখন এক প্রতিবাদী যন্ত্র। কলম।
সন্ধ্যা,আমি তোমাকে আগামী ভালোবাসা দিবসে গোলাপ নয় বরং কোনো ফুলই দেবনা।
সব গোলাপ শেষ হয়ে গেছে,শহীদ হাদির মাথায় ছোঁড়া বুলেটের আঘাতে। ফুলহীন ভুলেভরা ভালোবাসা তুমি নেবে না?
আর লিখতে পারছি না। আর লেখা যাচ্ছে না।
কালি শেষ হয়ে গেল। গল্প নয় বরং আক্ষেপ শেষ হওয়ার আগেই। বেড়ে গেল আক্ষেপের মাত্রা। বেঁচে আছি,হুম, আবেগের নিয়ন্ত্রণ শিখছি বলেই।
—————————————-
ছোট পাখি
বাড়ির উঠোনে বসে আছি।
উঠোনে গাছেদের সারি—
আমগাছ, পেয়ারা, লিচু
আর কাপড় শুকানোর বাঁশের আড়া।
আড়ার নিচে বসে আছি,
পাতাভরা কেদারা।
আমি ছোট পাখি।
মুক্ত পাখি।
স্বাধীনতা ভোগ করি পুরোপুরি।
ঘুম ভেঙে উড়ে বেড়াই,
ক্ষুধা লাগলে কবির বাড়িতে যাই—
যেখানে যা পাই, কুড়িয়ে খাই।
বহুদিন পরে কবিরে দেখি,
কেদারায় বসে থাকে।
কবিরে দেখে মায়া লাগে।
আমি পাখি হলেও
মনে প্রেম জাগে।
কবিরে দেখে কান্না আসে—
কবির পাশে ফেলে রাখা
দুটো লাঠি।
লাঠিতে ভর দিয়ে কবি হাঁটে।
আমি তার মাথার উপর উড়ে
ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ করে।
কবির সাথে কথা বলি—
কবি শোনে না।
আপন মনে কী যেন লেখে।
ভালো করে চেয়ে দেখি—
কবি আমারে নিয়েই
লিখছে কবিতা।
মোঃ মেহেদী হাসান রকি
কবি, গীতিকার, প্রাবন্ধিক, রাজনীতি ও সমাজ চিন্তক এবং সাহিত্য সমালোচক

